গৌরীপুর শুভ্র হত্যা মামলার অন্যতম আসামী মেয়র রফিকের আগাম জামিন, আবেগাপ্লুত সমর্থকরা

মো. হুমাযুন কবির,গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্র হত্যাকান্ডের অন্যতম আসামী গৌরীপুর পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও  পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামকে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ অন্তবর্তীকালীন ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ময়মনসিংহ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ কামাল আকন্দ।

তিনি জানান, ৫ নভেম্বর হাইকোটের বিজ্ঞ বিচারপতি শেখ মোঃ জাহির হোসেন ও বিজ্ঞ বিচারপতি কে.এম জাহিদ সরোয়ার এ জামিনাদেশ প্রদান করেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাকে সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে শনিবার সকালে পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম নিজ বাসায় আসার খবরে দলীয় নেতাকর্মী, কর্মী-সমর্থকদের ভিড় জমে উঠে। তাকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকেই। মেয়রের পুত্র সৈয়দ রাফসানজানি অভি অভিযোগ করেন, তার পিতা সৈয়দ রফিকুল ইসলাম পৌরসভার জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি, বিপুল ভোটের ব্যবধানে দুইবার নির্বাচিত হয়েছেন। তাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,বাড়িঘরে হামলা,লুটপাট অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। সমর্থক ও ভক্তদের দাবী জনপ্রিয়তার কারণে পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম একটি চক্রের ষড়যন্ত্রের শিকার।

মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন-ভালোবাসার জন্য আমার রাজনীতি,অস্ত্র লাঠির রাজনীতি আমি করি না। আইনের প্রতি আমি সব সময় শ্রদ্ধাশীল। গৌরীপুর এর জনগণ সব দেখেছেন, জানেন কে, কারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে এবং করছে। আমি বিশ্বাস করি জনগনের ভালোবাসা দোয়া আমার সাথে আছে।  বিচার এর দায়িত্ব আমি তাদের কাছেই দিলাম। জনগনের ভালোবাসা যতদিন আছে, ততদিন আমি  রাজনীতি করব। কোন সন্ত্রাসীর কাছে কখনো মাথা নত করব না।

আল্লাহ ভরসা উল্লেখ্য ১৭ অক্টোবর রাতে  প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্রকে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই আবিদুর রহমান প্রান্ত বাদী হয়ে ১৯ অক্টোবর গৌরীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে উপজেলা বিএনপির (একাংশের) যুগ্ম আহ্বায়ক ও মইলাকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিয়াদুজ্জামান রিয়াদ (৩৮)কে। এছাড়াও গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম (৫০) ও তার দু’ভাই সৈয়দ তৌফিকুল ইসলাম (৪৫), সৈয়দ মাজহারুল ইসলাম জুয়েল (৪২), রিয়াদুজ্জামান রিয়াদের ভাই কার্জন, উত্তর বাজার মহল্লার সাকিব আহম্মেদ রেজা (৩৩), পশ্চিম ভালুকার রিফাত (৩২), মইলাকান্দা ইউনিয়নৈর লামাপাড়ার মোজাম্মেল (৩০), নন্দুরা গ্রামের সুমন (৩০), পশ্চিম কাউরাট গ্রামের খাইরুল (৩০) ও হানিফ (৩০), পশ্চিম কাউরাট গ্রামের চান মিয়ার পুত্র রাসেল মিয়া (৩২), ইউনুছ আলীর পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (৩২) ও আব্দুল খালেকের পুত্র মজিবুর রহমান (৩০) কে ও অজ্ঞাতনামা ৭/৮জনকে আসামী করা হয়।

হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে তাকে দল থেকে বহিস্কার করার জন্য উপজেলা আওয়ামীলীগ ও জেলা আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগে সুপারিশ করেছে। অপরদিকে হত্যাকান্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৬জনকে গ্রেফতার করেছে গৌরীপুর থানা ও ডিবি পুলিশ। ময়মনসিংহ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এর অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ কামাল আকন্দ জানান, তাদের ৬জনই জেলহাজতে রয়েছে।