স্ত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক সন্দেহে নওগাঁয় এক ব্যক্তিকে মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে হত্যা

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ ঃ নওগাঁ সদর উপজেলার হাড়িয়াগাছি গ্রামে স্ত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে এমন সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন ছকু নামের এক ব্যক্তিকে মধ্যযুগীয় কায়দায় গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যপারে নওগাঁ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হলে
আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপরতা শুরু করেছে।

সদর উপজেলার হাড়িয়াগাছি গ্রামের হাড়িয়াগাছি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এমএলএসএস উক্ত তোফাজ্জল হোসেন ছকু’র সাথে অনেক আগে থেকেই একই গ্রামের জনৈক দিলদার হোসেনর স্ত্রী মনি বেগমের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে বলে দিলদারসহ তার পরিবারের লোকজনের সন্দেহ রয়েছে। এই সন্দেহের বশে গত
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় উক্ত তোফাজ্জল হোসেন ছকুকে দিলদার হোসেন ও তার লোকজন রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারপিট করে।

ছকুর পরিবার থেকে জানানো হয়েছে,  ছকু দিলদারের বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল । এসময়  ছকুকে দিলদার হোসেন ও তার লোকজন রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারপিট করে।  সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত গাছের সাথে বেঁধে রেখে উক্ত দিলদার হোসেন, সোহেল রানা, পরাগ, আরিফ ও সেলিনাবেগম সকলে মিলে লাঠিসোটা দিয়ে এক নাগাড়ে মারপিট করতে থাকে।

পরে তারা উক্ত তোফাজ্জল হোসেন ছকুর বিরুদ্ধে চুরির আভিযোগ এনে নওগাঁ সদর থানার পুলিশকে সংবাদ দেয়। পুলিশ এসে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেয়। পরে ছুকুকে তার পরিবারের লোকজনের কাছে চিকিৎসার জন্য হস্তান্তর করে থানায় ফিরে আসে। ছকুর পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রাতে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে। পরদিন বুধবার সন্ধ্যা থেকে উক্ত ছকুর অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে।

রাত ১২টায় নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে চিকিৎসরকরা তাকে মৃত ঘোষনা করেন। উক্ত তোফাজ্জল হোসেন ছুক বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। এ সংবাদ পেয়ে উল্লেখিত আসামীরা সবাই নিজ নিজ বাড়ি ছেড়ে পলাতক রয়েছে। তাদের বাড়িঘর এখন তালাবদ্ধ রয়েছে। এ ব্যপারে নওগাঁ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এ ব্যপারে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া বলেছেন কোন অসামাজিক কার্যক্রম থাকলে সে ব্যপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন ।

আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া অপরাধ। এ ব্যপারে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের তৎপরতা ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অবিলম্বে আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।