চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার অপরাধের আখড়ায় পরিণত হচ্ছে: কারাগারে অপরাধ দমনে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ জরুরি

রুপান্তর বাংলা –মোঃ আব্দুল কাদের– কারাগারে যার যত বেশি প্রভাব, সে তত বেশি প্রভাবশালী। আর যাদের প্রভাব নেই তাদের হতে হয় সাজাপ্রাপ্তদের নির্যাতনের শিকার। কারাগারের প্রধান ফটকে বড় বড় অক্ষরে লেখা ‘‘রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ’’ বাক্যটি এখানে শুধুই শ্লোগান।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের অনিয়ম নিয়ে একাধিক জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় বহুবার সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সে প্রেক্ষিতে আইনী ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। অসুবিধাসমূহ দূর করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পালন করা হয়। এতে কারাগারের পরিবেশ ও কর্মকর্তাদের মান উন্নয়ন করা হয়।

তবে তিনটা মানুষের কারণে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দীরা আবারও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তারা হলো আসামী কয়েদি। মনির, ইয়াকুব ও লেদু। এই ৩ জন কোনো সিআইডি কর্মকর্তা না হয়েও সিআইডির নাম ব্যবহার করে যোগসাজশে এবং ওখানে সালাসীর নামে অভিযান চালিয়ে মাদক, গাঁজা, চোরাচালানের সাথে জড়িত এবং মানুষকে এসবের ভয় ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মানুষকে অত্যাচার করে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। আগের সোহেল রানার আমলে যেমন অপরাধ, অত্যাচার চলছিল এখন এই তিনজন সেই অপরাধের ধারা অব্যাহত রেখেছে।

মনির, লেদু, ইয়াকুব এই তিনজনের কারণে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আবারো আসমীদেরকে নির্যাতন শুরু হয়েছে। আসামীদেরকে খাবার পানি পর্যন্ত বন্ধ করে দেয় তারা। টাকার বিনিময়ে আবার পানি দেয়। মানুষকে গাঁজা দিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়ে আবার টাকার বিনিময়ে মুক্ত করে তারা। যত রকমের খারাপ কাজ হয়, এদের তিনজনের নেতৃত্ব হয়।

কারাগারে চলছে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ হরেক রকম অপরাধমূলক কর্মকান্ড। এমন কোনো অবৈধ কাজ নাই যা তারা টাকার বিনিময়ে করে না। চাঁদাবাজি, আসামিদের যোগসাজশে অবৈধ টাকা পয়সা লেনদেন, ইয়াবা বিক্রি, মামলার ভয় দেখানো থেকে শুরু করে কারাগারে মেডিকেল সিট বিক্রির বাণিজ্য তো আছেই। এভাবে কত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই চক্র তা সরকারের হিসেবের তালিকায় স্থান পায় না। সরকারকে ফাঁকি দিয়ে লুটে খাচ্ছে লুটেরারা।

বিভিন্ন খাতে এভাবেই প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম দুই গুন, তিন গুন, অনেক ক্ষেত্রে চারগুন নেওয়া হচ্ছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের আসামীদের কাছ থেকে। কারাগারে অনিয়ম-দুর্নীতি এখন যেন ওপেন সিক্রেট। এটা খুবই খারাপ ও ন্যাক্কারজনক কাজ।

এ সকল অন্যায় অনিয়ম এর বিরুদ্ধে বারবার কলম চালিয়ে তেমন আশানুরূপ ফল দেখা যায় না।

যদি আইনের উচ্চ মহল, দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে এ সংক্রান্ত বিষয়ে সঠিক তদন্ত করে একটি পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়, তবে হয়তো নিয়মের অনুশাসন বিধিবিধান যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পালন কার্যকর হবে। এ জন্য দরকার সৎ, যোগ্য ও দায়িত্বপরায়ণ কর্মকর্তাদের নিয়োগে প্রাধান্য দেওয়া।