ময়মনসিংহ থেকে সিরাজুল হক সরকার: মুক্তাগাছা শহরের জমিদারদের প্রতিষ্ঠিত রাম কিশোর (আর.কে) সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনের পরিপন্থী কাজ করার গুরুত্বর অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্কুলের একজন সহকারী শিক্ষক বিজ্ঞ আদালতে ভূয়া জাল দলিল দাখিল করার প্রেক্ষিতে আদালত জেল হাজতে পাঠায়। পরবর্তীতে জামিনে বেরিয়ে আসে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার বিরুদ্ধে সাময়িক বরখাস্তের ব্যবস্থা না করে অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করে তাকে কর্মস্থলে যোগদান করান।
সূত্র মতে, মুক্তাগাছা আরকে সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের বিতর্কিত সহকারি শিক্ষক শফিকুল ইসলাম স্বপন জেলা লিগ্যাল এইডস্ কার্যালয়ের মাধ্যমে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিবাদী পক্ষ ময়মনসিংহ ১ম সাব জজ আদালতের ১৮৬/৭৯ নং অন্যপ্রকার মামলার রফানামার ফটোকপি দাখিল করে। বিষয়টি উপস্থিত বাদী পক্ষ সোহেল রানা বিবাদী পক্ষের দাখিলকৃত দলিল নং ১১৮৫৬, তাং ৩১/১২/১৯৭৬ আদালতে দাখিল করলে সোহেল রানা চ্যালেঞ্জ করে। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ আদালতের রেকর্ড রুম থেকে মামলাটির নথি তলব করে পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, মামলাটির সাথে দাখিলকৃত রফা নামার কোন মিল নাই। রফা নামাটি জাল। উক্ত স্বপন রফা নামা দিয়ে মুক্তাগাছা সহকারি কমিশনার ভূমি অফিস হতে জমি খারিজ করিয়ে নেন। যাহা আদালতে দাখিল করে। সোহেল রানা খারিজের বিষয়টি আদালতে তুলে ধরেন। পরবর্তীতে সহকারি কমিশনার ভূমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে পান যে, দাখিলকৃত দলিলের সাথে সাব রেজিষ্ট্রী অফিসের দলিলের কোন মিল নাই।
গত ২৪/০৬/২৪ তারিখে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে বাদী বিবাদী উভয়পক্ষ তাদের বিরোধীয় বিষয় নিয়ে আপোষের উদ্দেশ্যে হাজির হয়। বিবাদী পক্ষ ১ম সাব জজ আদালতে ১৮৬/৭৯ অন্য প্রকার মামলার ফটোকপি দাখিল করলে বিষয়টি জাল ধরা পরে। তাৎক্ষণিক উপস্থিত আদালত বিবাদী শফিকুল ইসলাম স্বপন কর্তৃক জাল রফানামা উপস্থাপন করা হয় যা একটি ধৃষ্টতাপূর্ণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ বিধায় তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে ২৬ তারিখ জেল/হাজত থেকে মুক্তি পান। ২৭ তারিখ স্কুলে আসেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার বিরুদ্ধে সাময়িক বরখাস্তের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে অবৈধভাবে চাকুরীতে যোগদান, হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর ও দায়িত্ব প্রদান করেন যা সম্পূর্ণ বেআইনী। সরকারী চাকুরী বিধি অনুযায়ী সংস্থাপন বিভাগের মেমো নং ইডি (রেজি-৬) এস-১২৩/৭৮/১১৫(৫০০), তারিখ- ২১/১৮/১৯৭৮ এর পরীপন্থী।
এ ব্যাপারে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয় নাই। বিষয়টি বুঝতে আমার বিলম্ব হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি ভাবছেন বলে জানান। একটি সরকারি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরকারি আইন মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তিনি একটি অপরাধকে ঢাকার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন বলে সাধারণ মানুষের মাঝে গুঞ্জন সৃষ্টি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় সহ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করা হচ্ছে।